£ 1,642.50
£ 1,789.25
বিশ্বের অধিকাংশ স্বর্ণ বাণিজ্যের মান ও মূল্য নির্ধারণকারী কেন্দ্র হিসেবে লন্ডনের উত্থান
লন্ডন, প্রাকৃতিক স্বর্ণের খনি না থাকা সত্ত্বেও, প্রায় তিন শতাব্দী ধরে বৈশ্বিক স্বর্ণ বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে আসছে। এর ইতিহাস ব্যাংকিং, উপনিবেশিক বাণিজ্য এবং মুদ্রাব্যবস্থার সাথে গভীরভাবে জড়িত। লন্ডন বুলিয়ন মার্কেট অ্যাসোসিয়েশন (LBMA) দ্বারা নির্ধারিত মান এবং লন্ডন স্প্রেড মূল্যের কারণে, এই শহরটি স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণ ও মান নিয়ন্ত্রণের বৈশ্বিক রেফারেন্স পয়েন্ট হিসেবে সুপরিচিত।
লন্ডনের স্বর্ণ বাজারের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের বিশাল স্বর্ণ রিজার্ভ এবং এটি পরিচালনা করার সক্ষমতার মাধ্যমে। সপ্তদশ শতাব্দী থেকেই ব্যাংকটি স্বর্ণের মজুত এবং লেনদেনের কেন্দ্রে পরিণত হয়, যা আন্তর্জাতিক আস্থা তৈরি করে।
১৯১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া লন্ডন গোল্ড ফিক্স (বর্তমানে LBMA গোল্ড প্রাইস) বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের বেঞ্চমার্ক মূল্য নির্ধারণ করে। লন্ডন বুলিয়ন মার্কেট অ্যাসোসিয়েশন (LBMA) স্বর্ণের বিশুদ্ধতা, ওজন এবং লেনদেনের জন্য ‘গুড ডেলিভারি’ স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখে, যা বাজারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করে।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের যুগে, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, এবং কানাডার মতো উপনিবেশ থেকে বিশাল পরিমাণ স্বর্ণ সরাসরি লন্ডনে আমদানি করা হতো। এই অবিচ্ছিন্ন সরবরাহ লন্ডনকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে স্বর্ণ পরিশোধন এবং বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত করেছিল।
লন্ডন বিশ্বের বৃহত্তম স্বর্ণের গুদামগুলির মধ্যে একটি। ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের ভল্টগুলি বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ মজুতের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রাখা হয়। এই মজুত লন্ডনের বাজারকে চরম তারল্য প্রদান করে।
লন্ডনের স্বর্ণ বাজার মূলত একটি ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) বাজার, যেখানে সরাসরি ডিলারদের মাধ্যমে লেনদেন হয়। এই বাজার বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে গভীর তারল্যের বাজার, যা আন্তর্জাতিক ব্যাংক, শোধনাগার এবং খনি কোম্পানিগুলিকে যুক্ত করে।
লন্ডনের অবস্থান একটি প্রধান বৈশ্বিক আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে স্বর্ণ ব্যবসাকে সহায়তা করে। এখানে বৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক, ব্রোকারেজ ফার্ম এবং আর্থিক পরিষেবাগুলির উপস্থিতি স্বর্ণের লেনদেন ও অর্থায়নকে সহজ করে তোলে।
সপ্তদশ শতাব্দীতে লন্ডনের গোল্ডস্মিথ (স্বর্ণকার) এবং প্রথম দিকের ব্যাংকগুলি মূল্যবান ধাতু বিনিময়ের কেন্দ্র হিসেবে কাজ শুরু করে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বর্ণের খনি আবিষ্কৃত হওয়ার পর, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের প্রবাহ লন্ডনকে বিশ্ববাজারের একচ্ছত্র কেন্দ্রে পরিণত করে।
পাঁচটি প্রধান বুলিয়ন ব্যাংকের প্রতিনিধিদের দ্বারা গোল্ড ফিক্স প্রক্রিয়া চালু হয়, যা প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী মূল্য নির্ধারণের একটি আনুষ্ঠানিক পদ্ধতি তৈরি করে।
বাজারকে আনুষ্ঠানিকভাবে মান নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করার জন্য লন্ডন বুলিয়ন মার্কেট অ্যাসোসিয়েশন (LBMA) গঠিত হয়।
ঐতিহ্যবাহী "গোল্ড ফিক্স" পদ্ধতিটি ইলেক্ট্রনিক LBMA গোল্ড প্রাইস দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়, যা বাজারের বৃহত্তর স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
লন্ডন গোল্ড মার্কেট কোনো খনি নির্ভর বাণিজ্য কেন্দ্র নয়, বরং এটি ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান, কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ এবং অতুলনীয় তারল্যের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী স্বর্ণ বাণিজ্যের সর্বোচ্চ আসনটি ধরে রেখেছে। LBMA এবং ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের ভূমিকা এটিকে বৈশ্বিক স্বর্ণ বিনিয়োগের জন্য একটি অপরিহার্য রেফারেন্স পয়েন্ট করে তুলেছে।
লন্ডনের স্বর্ণ বাজার কেবল ধাতু লেনদেন করে না, এটি বৈশ্বিক অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য বহন করে।
সঠিক তথ্য ও স্বচ্ছতার জন্য আমাদের অঙ্গীকার
আমাদের ওয়েবসাইটটি বিশেষভাবে সবার জন্য তথ্য প্রদান করার উদ্দেশ্যে তৈরি। এখানে প্রদর্শিত সোনার দাম শুধুমাত্র তথ্যের জন্য দেওয়া হয়েছে এবং এটি বাজারের রিয়েল-টাইম মূল্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। আমরা সবসময় তথ্য আপডেট করার চেষ্টা করি, তবে দামের সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
আমাদের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোনো অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই করুন। বাজারের প্রকৃত দাম এবং বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তারপরই কোনো লেনদেন সম্পন্ন করুন।
❗ গুরুত্বপূর্ণ: গোল্ড রেট পরিবর্তনশীল এবং বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে
আমাদের লক্ষ্য হলো আপনাদের জন্য একটি সহজ, আকর্ষণীয় এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যা নির্ভুল তথ্য প্রদান করে। আমরা আপনাদের মূল্যবান মতামত এবং পরামর্শকে স্বাগত জানাই।